ডোমিনিকার পর বাংলাদেশ দল এখন দক্ষিণ আমেরিকার দ্বীপদেশ গায়ানাতে। দেশ বদলালেও পরিস্থিতি যেন সেই একই। বাংলাদেশ পা দেওয়ার আগে থেকেই সেখানে অভিরাম বৃষ্টি ঝরছে। তাইতো সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ভেসে যাওয়া নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শঙ্কা। তবে প্রাকৃতিক এসব বিষয় প্রকৃতির হাতে ছেড়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল সেরাটা নিংড়ে দিতেই মাঠে নামতে প্রস্তুত।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। সিরিজ জয়ের কোনো পথ খোলা নেই, একমাত্র উপায় বাঁচানো। সেটি করতে হলে মাহমুদউল্লাহর সামনে জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

 

এবারের উইন্ডিজ সফরে ডোমিনিকা অধ্যায় ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। সেটি মাঠে হোক কিংবা বাইরে। কোনোটাতেই যে নেই স্বস্তি। প্রথমত ফেরি যোগে আটলান্টিক পাড়ি দিতে গিয়ে ভয়ঙ্কর দুঃস্মৃতি। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিং ভরাডুবিতে হার। সাদাপোশাকে হারের বৃত্তে থাকা বাংলাদেশ দলের সামনে সুযোগ ছিল রঙিন পোশাকে রাঙানোর। কিন্তু হয়ে ওঠেনি।

ডোমিনিকা থেকে গায়ানা আসলেও বৃষ্টি যেন পিছু ছাড়েনি। আবহাওয়া বার্তায় সারাদিনই বজ্রসহ বৃষ্টিপাতে সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম ম্যাচের মতো এটিও ভেসে যায় কিনা আছে বড় প্রশ্ন। তবে মাহমুদউল্লাহ এত কিছু ভাবছেন না।

‘বৃষ্টির বিষয়টা আমাদের হাতে নেই। আমরা আমাদের প্রস্তুতি সাধ্যমত নেয়ার চেষ্টা করব। আমরা ইতিবাচকভাবে চিন্তা করব যে ম্যাচটা পুরোপুরি হবে। না হলে আমাদের সেটা মানসিকভাবে মানিয়ে নিতে হবে। প্রস্তুত থাকতে হবে। হয়তো ওভার কমতে পারে। আমরা ইতিবাচক থাকব আমরা পুরো ম্যাচ খেলব ইনশাল্লাহ’

টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা বিরাজমান। প্রথম ম্যাচে ১৩ ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ এসেছিল। সেখানেও ছিল আসা যাওয়ার মিছিল। আর দ্বিতীয় ম্যাচে এক সাকিব আল হাসান ছাড়া কারো ব্যাট ঠিকমতো কথা বলেনি। ফলস্বরূপ হারতে হয়েছে ৩৫ রানে। তার মধ্যে বোলাররাও সুবিধা করতে পারেনি। সবকিছু মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ প্রস্তুতির শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের।

আজ দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। মাহমুদউল্লাহ বলেছেন দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হতে হবে ব্যাটসম্যানদের। আর বোলারদের উপর তার আস্থা আছে। ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিকদের মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি খেলাটাই এরকম। অনেক সময় ওপেনাররা ভালো শুরুর পরও মিডল অর্ডার সেটা টেনে নিয়ে নাও যেতে পারে। তারপরও কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। আগের ম্যাচে সাকিব যেরকম একটা ইনিংস খেলল আমরা ১৬০ এর কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম। এরকম একজনকে করতে হবে। সঙ্গে কয়েকজনকে ১৫-২০-৩০ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলতে হবে।’

 

অথচ টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুর্দান্ত দল হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে তেমন সুবিধা করতে পারেনি। হার-জিতের পাল্লা দুই দলেরই প্রায় কাছাকাছি অবস্থান। এখন পর্যন্ত দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ১৫বার। তাতে ৮বার উইন্ডিজ ও ৫বার বাংলাদেশ জিতেছে। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিসহ ২ ম্যাচের ফল হয়নি। সবশেষ সফরে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সিরিজও জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। এবারও সিরিজ জয়ের সুযোগ না থাকলেও আছে বাঁচানোর সুযোগ।

এই ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে দুটি পরিবর্তন হতে পারে। একাদশে ফিরতে পারেন মুনিম শাহরিয়া। তিনি ব্যাক ইনজুরির কারণে দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে পারেননি। এ ছাড়া এক পেসার কম নিয়ে নামতে পারে বাংলাদেশ। একাদশে ফিরতে পারেন নাসুম আহমেদ। গায়ানার পিচ কিছুটা স্লো। সেই হিসেবে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজম্যান্টে স্পিনে শক্তি বাড়ানোর দিকেই নজর দেবে। বাদ পড়তে পারেন মোসাদ্দেক হোসেন ও তাসকিন আহমেদ।

টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টিতেও খাপছাড়া বাংলাদেশ। যেন এখনো এই সংস্করণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উঠতে পারেনি লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। মাহমুদউল্লাহর চাওয়া এই ম্যাচে দায়িত্ব নিয়ে খেলবেন তার সতীর্থরা। শেষ পর্যন্ত তাই কি হবে? বলে দেবে সময়।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন ধ্রুব, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।